মক্কা শরীফের দর্শনীয় স্থান সমূহ! (পর্ব-১৩) - Alhera-1

""আল্লাহ'র বিধান ছাড়া কোন বিধান মানি না""

শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০১৯

মক্কা শরীফের দর্শনীয় স্থান সমূহ! (পর্ব-১৩)

‎بِسْــــــــــــــــــمِ-اﷲِالرَّحْمَنِ-اارَّحِيم‎
মক্কা শরীফের দর্শনীয় স্থান নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
(১) মাতাফঃ বায়তুল্লাহর চার দিকে অবস্থিত তাওয়াফের স্থানকে মাতাফ বলা হয়।
(২) হাজরে আসওয়াদঃ হাজরে আসওয়াদ বায়তুল্লাহ শরীফের দহ্মিণ-পূর্ব কোণে মাতাফ থেকে দেড় মিটার উপরে লাগানো। হাজরে আসওয়াদ তাওয়াফ শুরু ও শেষ করার স্থান। তাওয়াফ শুরুর সময় এই হাজরে আসওয়াদকে চুমু দিতে হয়।
(৩) মাকামে ইব্রাহিমঃ বায়তুল্লাহ শরীফের পূর্ব পার্শ্বে আছে। ক্রিস্টালের একটি বক্সে, চারদিকে লোহার বেষ্টনী। ভিতরে বর্গাকৃতির একটি পাথর। পাথরটির দৈর্ঘ্য-প্রস্থ ও উচ্চতা প্রায় সমান- এক হাত। এই পাথরটিই মাকামে ইব্রাহিম। হযরত ইব্রাহিম (আ:) এর মুজেজা হিসাবে শক্ত পাথরটিতে পায়ের দাগ আজও স্পষ্ট দেখতে পাবেন। বর্তমানে তামা ও আয়নার তৈরি বক্সে রাখার আগে পাথরটি হাতে ধরে মানুষ দেখতে পেরেছে। চার হাজার বৎসরের বেশি সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও মাকামে ইব্রাহিমে পায়ের চিহ্ন অপরিবর্তিত,  আমাদের বিশ্বাস কিয়ামত পর্যন্ত তা অপরিবর্তিত থাকবে। পায়ের ছাপের দৈর্ঘ্য (উপরে) ২৭ সেন্টিমিটার,  প্রস্থ ১৪ সেন্টিমিটার। পাথরের নিচের অংশ প্রতিটি পায়ের দৈর্ঘ্য ২২ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ১১ সেন্টিমিটার। দুই পায়ের মধ্যে ব্যবধান প্রায় ১ সেন্টিমিটার। পায়ের দাগের গভীরতা প্রায় ৯ সেন্টিমিটার। 
(৪) কিসওয়াঃ কাবা শরীফ আবৃত করে রাখা কাপড়টিকে কিসওয়া বা গিলাফ বলে। মজবুত রেশমি কাপড় দিয়ে তৈরি করা হয় এই গিলাফ। গিলাফের মোট পাঁচটি টুকরো বানানো হয়। চারটু টুকরো চার দিকে আর পঞ্চম টুকরোটি দরজায় লাগানো হয়। সব কটি কাপড়ের টুকরো পরস্পর সেলাই যুক্ত। 
প্রতি বৎসর হজ্জের দিন বায়তুল্লাহ কে সাজানো হয় এই গিলাফ দিয়ে। সম্মানিত হাজি সাহেবান আারাফা থেকে ফিরত এসে বায়তুল্লাহ শরীফের গায়ে দেখতে পান এই নতুন গিলাফ। উক্ত গিলাফে বিভিন্ন দুআর নকশা আঁকা হয়। গিলাফের উচ্চতা ১৪ মিটার। উপরের তৃতীয়াংশে ৯৫ সেন্টিমিটার চওড়া বন্দনীতে কুরআনের আয়াত লেখা থাকে। বন্দনীটি সোনার প্রলেপ দওয়া রুপালী তারের মাধ্যমে এমব্রয়ডারী করা। এই বন্দনী বায়তুল্লাহ শরীফের চার দিকে বেষ্টিত। ৪৭ মিটার লম্বা বন্দনীটি ১৬টি টুকরোয় বিভক্ত। বন্দনীটির নিচে প্রতি কোণায় সূরা ইখলাস লিখা। নিচে আলাদা ফ্রেমে লিখা হয় কুরআন শরীফের ৬টি আয়াত। এতে এমব্রয়ডারি করে উপরে সোনা ও রুপার তার লাগানো হয়।
(৫) বায়তুল্লাহ শরীফঃ আল্লাহর ঘর। প্রায় বর্গাকৃতির। এর দৈর্ঘ ও প্রস্থ যথাক্রমে আনুমানিক ৪৫ ও ৪০ ফুট। বায়তুল্লাহর একটি মাত্র দরজা আর তা হলো পূর্ব দিকে।
(৬) মীযাবে রহমতঃ কাবা শরীফের উত্তর দিকের ছাদে হাতীমের মাঝ বরাবর যে নালা বৃষ্টির পানি পড়ার জন্য বসানো আছে তাকে মিযাবে রহমত বলা হয়।
(৭) হাতীমে কাবাঃ যাহা বায়তুল্লাহর উত্তর পর্শ্বে  অর্ধ বৃত্তকার আনুমানিক চার ফুট উচু প্রাচীরে ঘেরা একরি স্থান। তাওয়াফের সময় তাওয়াফের ভিতরে থাকে।
(৮) জান্নাতুল মুআল্লাহঃ ইহা মক্কা শরীফের বিখ্যাত কবরস্থান। যেখানে হজরত খাদিজা (রা.) যিনি উম্মতের মা জননী হিসাবে পরিচিত,  তার কবরস্থান সহ তার পুত্র কাসেম (রা.) আরও অনেকেই আছেন। ইহা কাবা শরীফের উত্তরে আনুমানিক দুই কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
(৯) গারে হেরাঃ মক্কা শরীফের সর্বোচ্চ উঁচু পাহাড়ের নির্জন স্থান। এখানে বিশ্ব নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ধ্যান মগ্ন (মুরাকাবায়) থাকা কালে এখানেই সর্ব প্রথম পবিত্র কুরআন নাজিল হয়। ইহা উঁচু প্রায় দেড় মাইল।
(১০) গারে ছাওরঃ ইহাও উঁচুতে হেরা পর্বতের মত। হারাম শরীফ থেকে পশ্চিম দিকে, বিশ্ব নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরতের সময় এই প্রকান্ড উঁচু পর্বতে তিন দিন অবস্থান করেছিলেন।
(১১) জাবাল-ই-রহমতঃ এ পর্বতে সর্ব প্রথম, প্রথম নবী হযরত আদম (আ:) এর দুআ কবুল হয়। ইহা আরাফা ময়দানে অবস্থিত। এখানেই বাবা আদম (আ:) ও মা হাওয়া (আ:) এর প্রথম সাহ্মাৎ হয়। এখানেই বিশ্ব নবী সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্জের খুৎবা দিয়েছিলেন।
(১২) যমযম কূপঃ যমযম কূপ হলো মহান আল্লাহ তায়ালার অনুপম নিদর্শনের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ নিদর্শন। যাহা কাবা শরীফের অতি নিকটে পূর্ব পার্শ্বে অবস্থিত। এই কূপের পানি সর্বাধিক সচ্ছ, উৎকৃষ্ট, পবিত্র ও বরকতময়। এ পানি পিপাশা মিটানোর সাথে সাথে হ্মুধা নিবারণ করে ও রোগ আরগ্য করে থাকে।
{কিতাবুল হজ্জ ও উমরাহ কৃত কাজী আব্দুর রাজ্জাক | পৃ:২৬-২৮}
(পড়া চালু রাখুন)

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন